যুদ্ধে প্রাপ্ত মালে গানীমার এক পঞ্চমাংশ রাষ্ট্র-তহবিলে জমা করে বাকি চার ভাগ সৈনিকদের মধ্যে বন্টন করে দিতেন। সাধারণত তিনি কোমলতা অবলম্বন করতেন। কিন্তু প্রয়োজনে তিনি হতেন ইস্পাতের মতো কঠিন। তিনি একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক ছিলেন। তারঁ জীবনে বিলাসিতা ছিলোনা। তিনি দুনিয়ার প্রতি আসক্ত ছিলেন না।
তিনি তারঁ উত্তরাধিকারীদের জন্যও কোন ধন-রত্ন জমা করে যাননি। ইন্তিকালের পূর্বে তিনি তারঁ পুত্র ওরখানকে সম্বোধণ করে বলেন, তোমার প্রতি আমার নির্দেশ এই যে কখনো যুলুম ও নিষ্ঠরতা অবলম্বন করবেনা। বিজিত অঞ্চলে ইসলাম প্রচারের উদ্যোগ নেবে। জ্ঞানী ব্যক্তিদের সম্মান করবে। শারীয়ার বিধি-বিধান মেনে চলবে। ঐশী আইনই আমাদের বড়ো শক্তি।
পরম করুণাময়ের পথেই আমাদের সমৃদ্ধি। প্রজাদের রক্ষণাবেক্ষণ তোমার বড়ো কর্তব্য। এই কর্তব্য পালন করতে পারলে তুমি পরম করুণাময়ের অনুগ্রহ ও আশ্রয় লাভ করতে পারবে। ১২৯৯ খৃষ্টাব্দে তারঁ সেনাপতিত্বে তারঁ সৈন্যগণ ইয়েনি দখল করে। এই ইয়েনি শহরই হয় উসমানী খিলাফাতের প্রথম রাজধানী। ১৩০১ খৃষ্টাব্দে পার্শ্ববর্তী খৃষ্টান দেশ গ্রীসের সাথে উসমানের যুদ্ধ বাধে। গ্রীসই তখন পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র।
কুয়ুন হিসার যুদ্ধে গ্রীক সেনাপতি মুজালোনকে পরাজিত করে তিনি গ্রীস সাম্রাজ্যের কিছু অংশ দখল করেন। আবার ১৩০২ খৃষ্টাব্দে গ্রীসের রাজা এক বিশাল সৈন্য বাহিনী নিয়ে আমীর উসমানের বিরুদ্ধে অগ্রসর হন। যুদ্ধে গ্রীসের রাজা পরাজিত হন। তারঁ রাজ্যের এশীয় অঞ্চল উসমানের পদানত হয়।
এই যুদ্ধের এক পর্যায়ে অন্যতম গ্রীক সেনাপতি এভারনোজ আল ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব উপলব্দি করতে সক্ষম হন। মুসলিমদের আচরণ, চারিত্রিক পবিত্রতা এবং শৃঙ্খলা দেখে তিনি মুগ্ধ হন। তিনি তারঁ অনুগত সৈন্যদেরকে নিয়ে খৃষ্টানধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে এভারনোজ এবং তারঁ সাথীদের তলোয়অর ইসলামের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য ব্যবহৃত হতে থাকে।