আর মাত্র কয়দিন! অতঃপর আসছে গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন অর্থাৎ ইংরেজি নববর্ষ। কাফিরদের পাশাপাশি মুসলিমরা ও এই দিন উদযাপনে লিপ্ত হয়ে যায়।অথচ সে না জানে এই দিনের উৎপত্তি সম্পর্কে, না জানে এটার উদযাপনের বিধান সম্পর্কে। আমরা এই দিন সহ কাফিরদের বিভিন্ন উৎসবে যোগদান, শুভেচ্ছা জানানো, উপহার দেয়ার বিধান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
ইংরেজি নববর্ষের ইতিহাসঃ
ঈসা আলাইহিসালাম এর জন্মের ৪৮ বছর পূর্বে [তাদের মতে ৪৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে] সম্রাট জুলিয়াস সিজার রোমান ক্যালেন্ডারকে সংস্কার করে নতুন ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করে যার নাম ছিল জুলিয়ান ক্যালেন্ডার। রোমান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রোমানরা ঈসা আলাইহিসালাম এর জন্মের ১৫৩ বছর পূর্বে [খ্রীস্টপূর্ব ১৫৩ সালে] নববর্ষ পালন শুরু করে।
জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন জানুয়ারি রাখা হয় তাদের মিথ্যা দেবতা জানুসকে উৎসর্গ করে যে ছিল তাদের শুরুর দেবতা! এবং তার নামানুসারেই প্রথম মাসের নাম জানুয়ারি রাখা হয়। এবং তাদের অধিকাংশ মাস ই তাদের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে এবং তাদের মিথ্যা দেবদেবীর নামে।
কিন্তু এই ক্যালেন্ডারে কিছু সমস্যা থাকায় এবং সম্পুর্ন নির্ভুল থাকায় জ্যোতির্বিদদের পরামর্শে পোপ তৃতীয় পল এটি সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
১৫৮২ সালের অক্টোবরের ১৫ তারিখে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরীর সময়ে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের সংস্কার হিসেবে নতুন ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করা হয় যা গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার হিসেবে পরিচিত এবং বর্তমানে বহুল প্রচলিত ক্যালেন্ডারটি ই হলো গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার।
অনেক আগে থেকেই মানুষজন নববর্ষ পালন করে আসছে। যেমনঃ ইরাকে প্রায় চার হাজার বছর পূর্বে তা পালন করা হতো,রোমানরা ঈসা আলাইহিসালাম এর জন্মের বহু পূর্ব থেকে তা উদযাপন করতো, পারস্যে নববর্ষের দিন [নাইরোজ; নওরোজ ও বলা হয়] উদযাপন অনেক আগে থেকেই শুরু হয়।
এবং বিভিন্ন দেশে দেশে ইংরেজি নববর্ষ পালন মূলত শুরু হয় ১৯ শতাব্দীতে। প্রথমে ইউরোপীয় দেশগুলো, অতঃপর উপনিবেশিক দেশগুলো এবং ক্রমান্বয়ে অধিকাংশ ভূখণ্ডে তা ছড়িয়ে পরে।
নিউ ইয়ার ইভঃ
৩১ ডিসেম্বরকে নিউ ইয়ার ইভ বলা হয়। এটিও নতুন দিবস উদযাপনের সাথে জড়িত কারণ নতুন দিবসের সাথে সম্পর্ক রেখেই এই দিন এবং রাত উদযাপন করা হয়।৩১ ডিসেম্বর রাত ই মূলত থার্টি ফার্স্ট নাইট অর্থাৎ রাত ১২ঃ০০ টায় বিভিন্ন উদযাপনের মাধ্যমে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়।
ইসলাম বনাম নববর্ষ কিংবা থার্টি ফার্স্ট নাইট অথবা বিভিন্ন নববর্ষঃ
প্রথমত জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন ই উৎসর্গ করা হয়েছে তাদের মিথ্যা দেবতা জানুসকে। এবং সে সময়ে রোমানদের নিকটে জানুস একজন বড় উপাস্য ছিল।
সুতরাং এটা নিঃসন্দেহে হারাম। এবং কেউ যদি তাদের দেবতা জানুসের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নতুন দিবস উদযাপন করে, তাহলে সেই ব্যক্তির সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। সে আল্লাহ এবং তার রাসুলের প্রতি কাফির। কেননা, জানুসের প্রতি সম্মান দেখানো মানে আল্লাহর সাথে ভিন্ন কোনো ইলাহ সাব্যস্ত করা। এবং শির্কের ভয়াবহতা সম্পর্কে আমরা অবগত। তবে সাধারণত নববর্ষ উদযাপন করা হারাম। কিন্তু আমাদের জন্য হারামকে ত্যাগ করাও বাধ্যতামূলক।
দলীলঃ
ক.”যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক বানায়, আল্লাহ নিঃসন্দেহে তাকে ক্ষমা করবেন না। এ ছাড়া যাকে তিনি চান ক্ষমা করবেন।”[কুরআন ০৪ঃ৪৮]
খ.”এটা আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না।”[কুরআন ০২ঃ১৮৭]
গ.রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”আমি তোমাদেরকে যা কিছু নিষেধ করি তোমরা সেসব থেকে বিরত থাকো।”[মুসলিম]
এসব নববর্ষ উদযাপন নিঃসন্দেহে এবং হারাম। আগে পারস্যের অধিবাসীরা তাদের নববর্ষের দিন তথা নাইরোজ উদযাপন করতো এবং এর বিরুদ্ধে বেশ কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
দলীলঃ
ক.আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস রাদিআল্লাহু আনহু বলেন,”যে অনারব ভূখণ্ডে বসবাস করে এবং তাদের নাইরোজ[নববর্ষের দিন] এবং মাহরাজানে অংশ নেয় এবং তাদেরকে অনুসরণ করে এবং সে অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে সে আখিরাতে তাদের সাথে ই উত্থিত হবে।”[আস সুনান আল কুবরা]
কাফিরদের বিভিন্ন উৎসব তাদের দ্বীনের ই অন্তর্ভুক্ত।রোমানদের নিকটে জানুস ছিল বড় উপাস্য এবং পহেলা জানুয়ারি এবং তার পূর্বের রাত্রিতে উদযাপন তাদের উপাস্য এবং পৌত্তলিকতার অংশ ছিল। এবং এ ব্যাপারটা সুস্পষ্ট কারণ তারা তাদের দেবতার উপলক্ষে ই তা উদযাপন করতো।
দলীলঃ
ক.ঈদ আল ফিতরের দিনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”নিশ্চয়, প্রত্যেক জাতির ই ঈদ রয়েছে এবং আমাদের ঈদ হলো এই দিনে।”[মুসনাদ, ইসহাক ইবনু রাহওয়াইহ]
শাইখুল ইসলাম বলেন,”উদযাপন শরী’আহর অংশ।”
নিঃসন্দেহে নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন সহ বিজাতীয় অনুষ্ঠান তাদের ধর্মের অংশ, আমাদের নয়।
আমাদের জন্য কাফিরদেরকে অনুকরণ করা হারাম।শরী’আহতে কাফিরদেরকে অনুকরণ এবং অনুসরণের ব্যাপারে বেশ নিষেধ এসেছে। সুতরাং কিভাবে কেউ বিজাতীয় উৎসব উদযাপন করতে পারে?
দলীলঃ
ক.রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”যে কাউকে অনুকরণ করবে, সে তাদের ই অন্তর্ভুক্ত।”[মুসনাদ,ইমাম আহমাদ]
খ.আবু সাঈদ রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”তোমরা তোমাদের পূর্বসূরিদেরকে সম্পুর্ন বিঘতে বিঘতে অনুসরণ করবে।…এমনকি তারা দাব্বের[এক ধরণের সরীসৃপ] গর্তে ঢুকে গেলে, তোমরা ও সেখানে যাবে।” আমরা জিজ্ঞেস করলাম,”হে রাসুলুল্লাহ, আপনি কি ইহুদি এবং খ্রিষ্টানদেরকে বুঝাচ্ছেন?” তিনি বলেন,”তো আর কারা?!”[সহীহ বুখারী]
গ.আমর ইবনু শু’আইব রাহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”বিজাতির অনুকরণকারী আমাদের দলভুক্ত নয়।তোমরা ইয়াহুদী এবং নাসারাদেরকে[খ্রিষ্টান] অনুকরণ করো না।”[তিরমিজি]
ঘ.আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”ইয়াহুদী এবং নাসারারা [চুল ও দাড়িতে] রঙ লাগায় না। সুতরাং তোমরা তাদের উল্টো করো।”[সহীহ বুখারী]
ঙ.আদি ইবনু হাতিম রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”ইয়াহুদীরা অভিশপ্ত এবং নাসারারা পথভ্রষ্ট।”[তিরমিজি]
এসব নববর্ষ এবং থার্টি ফার্স্ট নাইট পালনে বেশ অশ্লীলতার প্রসার ঘটে। মদ্যপান, অশালীন পোষাক পরিধান করা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার মতো গর্হিত কাজ তখন ঘটে থাকে। অথচ এগুলো নিঃসন্দেহে হারাম। তাছাড়া এসব উদযাপনে ব্যাপক অপচয় ও হয়ে থাকে।
দলীলঃ
ক.”বলুনঃআমার রব্ব তো হারাম করেছেন অশ্লীল কাজ- যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, এবং পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন।”[কুরআন ০৭ঃ৩৩]
খ.”আর মুমিন নারীদেরকে বলুন, যেনো তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায়[ওড়না, মোজা ইত্যাদি] তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেনো তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে[চেহারাসহ] আবৃত করে রাখে। আর তারা যেনো তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজেদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেনো নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।”[কুরআন ২৪ঃ৩১]
গ.”নিশ্চয় অপচয়কারী শাইতানের ভাই।”[কুরআন ১৭ঃ২৭]
ইংরেজি কিংবা রোমান কিংবা বাংলা কিংবা অন্যান্য নববর্ষের সাথে শির্কী বিশ্বাস জড়িত থাকে। কুসংস্কার এবং কুলক্ষণে বিশ্বাসের মতো শির্কী বিশ্বাসের চর্চা করা হয়ে৷ অনেক স্থানে ধরে নেয়া হয় যা মঙ্গল শোভাযাত্রা মঙ্গল আনবে, পেঁচা কুলক্ষণের প্রতীক, ইত্যাদি! অথচ এগুলো নিঃসন্দেহে শির্ক।
দলীলঃ
ক.ইবনু মাস’উদ রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”কোনো বস্তুকে কুলক্ষণ মনে করা শির্ক, কোনো বস্তুকে কুলক্ষণ ভাবা শির্ক।” একথা তিনি তিনবার বলেন।[সুনান আবি দাউদ]
কাফিরদের উৎসবে[নববর্ষ কিংবা অন্যান্য] তাদেরকে অভিনন্দন জানানো কিংবা পুরষ্কার দেয়ার কিংবা অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞাঃ
১.কাফিরদেরকে তাদের উৎসবের শুভেচ্ছা কিংবা অভিনন্দন জানানো আলিমদের ঐক্যমতে হারাম৷
ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ ইজমার কথা উল্লেখ করেন।
তাছাড়া ইমাম আবু ওয়ালিদ, আজ জুয়াইনী, আলাউদ্দিন সমরকন্দী,ইবনু কাসীর, তাজউদ্দীন সুবকী সহ অনেকে ইজমা নিয়ে আলোচনা করেন৷
২.উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু আনহু বলেন,”শত্রুদের ঈদের দিনগুলোতে তাদেরকে পরিহার করো।”[আত তারীখ আল কাবীর]
৩.ইবনু নুজাইম আল হানাফী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,”নাইরুজ এবং মাহরাজান এর উদ্দেশ্যে উপহার দেয়ার অনুমতি নেই।…বরং এটা কুফর।”[আল বাহর আর রাইক]
৪.আবু হাফস আল কাবীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন,”যদি কোনো ব্যক্তি পঞ্চাশ বছর আল্লাহ তা’আলার ইবাদাত করে, অতঃপর নাইরুজের দিনে, এই দিনকে সম্মানের নিয়্যাতে কোনো মুশরিককে যদি একটা ডিম ও পুরষ্কার হিসেবে দিলো, সে কুফর করলো এবং তার সমস্ত সাওয়াব বাতিল হয়ে গেলো।”
একনজরে-
~এসব দিন উপলক্ষে কাউকে অভিনন্দন জানানো[যেমনঃ হ্যাপি নিউ ইয়ার বলা] কিংবা উপহার দেয়া হারাম।
~কেউ এগুলোকে জায়িয মনে করলে, সে কুফরে লিপ্ত। তবে কেউ এগুলো উদযাপন যে হারাম তা না জানলে তাকে তাকফীর করা হবে না কিন্তু তাকে করা হবে যার নিকটে এগুলোর ব্যাপারে দলীল পৌছেছে তবুও সে এগুলোকে জায়িয মনে করে।
~কেউ নববর্ষকে কিংবা বিধর্মী উদযাপনকে সম্মান করে কিংবা তাদের এই উদযাপনকে নিজেদের জন্য জায়িয মনে করে তাদেরকে অভিনন্দন জানালে কিংবা উপহার দিলে সে কুফরে লিপ্ত।
~কেউ জানুসকে বা ভিন্ন মিথ্যা উপাস্যকে সম্মান জানিয়ে কিংবা কাফিরদের এই উদযাপনকে সঠিক মনে করে কিংবা তাদের ধর্মমতকে সঠিক মনে করে এগুলো উদযাপন করলে সে নিঃসন্দেহে কাফির। একই বিধান তার ক্ষেত্রে যে বিধর্মীদের দিন বলে এদিনকে সম্মান জানায়।
~কেউ এগুলোকে হারাম ভেবে কিংবা হালাল মনে না করে উদযাপন করলে সে কাফির হবে না, তবে কবীরাহ গুণাহগার হবে।
এবং সবগুলো বিধান ইংরেজি নিউ ইয়ার সহ বিধর্মীদের সবকিছুর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
হিজরি নববর্ষ পালনের বিধানঃ
হিজরি নববর্ষ পালনের ক্ষেত্রে দুইটি দৃশ্য সামনে আসে।সেগুলো হলোঃ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নববর্ষ উদযাপন এবং কাফিরদের অনুকরণে তা উদযাপন।
~ক.কাফিরদেরকে অনুকরণ করে উদযাপনঃ
এটা নিঃসন্দেহে হারাম কেননা কাফিরদেরকে কোনোভাবেই অনুকরণ করা যাবে না৷ দ্বিতীয়ত, ইংরেজি নববর্ষ তো তাদের ইবাদাতের সাথে ই জড়িত।এটা নিয়ে পূর্বে আলোচনা করেছি।
~খ.আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উদযাপনঃ
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যা করা হয়, নিঃসন্দেহে তা ইবাদাত।কিন্তু সে আমল নিঃসন্দেহে বিদ’আহ যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিংবা সাহাবীদের থেকে প্রমাণিত নয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো বহুদূর, কোনো সাহাবী,তাবি’ঈ কিংবা তাবি-তাবি’ঈ ও হিজরি নববর্ষ উদযাপন করেনি। আমাদেরকে অবশ্যই বিদ’আহ থেকে দূরে থাকতে হবে।
দলীলঃ
ক.রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”তোমরা[দ্বীনে] নবউদ্ভাবিত বিষয়াবলি থেকে সতর্ক থাকো৷ কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয় ই বিদ’আহ এবং প্রত্যেক বিদ’আহ ই ভ্রষ্টতা।”[সুনান আবি দাউদ]
খ.রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”নিশ্চয় সর্বোত্তম বাণী আল্লাহর কিতাব এবং সর্বোত্তম আদর্শ মুহাম্মাদের আদর্শ। আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট বিষয় হল [দ্বীনে] নব উদ্ভাবিত বিষয়।এবং নবউদ্ভাবিত প্রত্যেক বিষয় বিদ’আহ এবং প্রত্যেক বিদ’আহ হলো ভ্রষ্টতা এবং প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম।”[সুনান আন নাসা’ঈ]
আমাদের করণীয়ঃ
১.আমরা এসব উৎসব থেকে দূরে থাকবো।
২.যারা অংশগ্রহণ করে তাদেরকে সঠিকটা বুঝাবো এবং নাসীহাহ দিবো।
৩.মোটকথা, আল্লাহ তা’আলার নিকটে পানাহ চাইবো৷