সকল প্রশংসা রাব্বুল আলামীনের জন্য। শুভ পরিণতি মুত্তাকীদেন জন্য। আর শাস্তি হচ্ছে যালিমদের জন্য। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন ইলাহ নেই। তিনি একক তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি সুস্পষ্ট মালিকে হক [প্রকৃত অধিপতি] আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দাহ এবং রাসূল। তিনি সর্বশেষ নবী। মুত্তাকি [আল্লাহভীরু] লোকদের ইমাম [নেতা]। আল্লাহ অনুগ্রহ করুন তাঁর প্রতি। তাঁর বংশের প্রতি। তাঁর সাহাবীগণের প্রতি এবং নিষ্ঠার সাথে যারা কেয়ামত পর্যন্ত তাঁদের অনুসরণ করে যাবেন তাদের প্রতি।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁরই রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীন সহ পাঠিয়েছেন। তাঁকে পাঠিয়েছেন গোটা সৃষ্টিকুলের জন্য রহমত ও শান্তির দূত হিসেবে। আমলকারীদের মহান আদর্শ হিসেবে এবং সকল বান্দাহর জন্য প্রমাণ স্থাপনকারী হিসেবে।
আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর উপর যে কিতাব ও হিকমত নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে এমন সব বিষয় বর্ণনা করে দিয়েছেন যাতে নিহিত রয়েছে বান্দাহর অপরিসীম কল্যাণ। রয়েছে সহীহ আকীদা, নির্ভেজাল কর্ম, উন্নত চরিত্র এবং মহৎ শিষ্টাচার তথা দ্বীন ও দুনিয়ার সর্ববিষয়ে দৃঢ়তা ও স্থিতিশীলতা লাভের অমূল্য পাথেয়। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে এমন এক স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন আদর্শের উপর রেখে গেছেন যা দিবালোকের মত সুস্পষ্ট। যার জীবনে ধ্বংস অনিবার্য সে ছাড়া এ পথ থেকে অন্য কেউ বিচ্যুত হয় না।
সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়ীন এর মত সৃষ্টির উত্তম ব্যক্তিগণই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দেয়ার মাধ্যমে উক্ত পথ অবলম্বন করেছেন। তাঁরা এবং তাঁদেরকে যারা নিষ্ঠার সাথে অনুসরণ করেছেন। তাঁরা তাঁর শরী‘আতকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আকীদা, ইবাদত, চরিত্র ও শিষ্টাচারের ক্ষেত্রে তাঁরা তাঁর সুন্নাতকে দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরেছেন। এর ফলে তাঁরা এমন দলে পরিগণিত হয়েছেন যারা হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে। কোন অপমানকারীর অপমান কিংবা কোন বিরোধিতাকারী তাদের ক্ষতি করতে পারে না। এভাবে তাঁরা সত্যের পথে অবিচল থাকেন যতক্ষণ না আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে চুড়ান্ত নির্দেশ আসে।
আল্লাহ তা‘আলার অপরিসীম প্রশংসা এ জন্য যে, আমরা তাঁদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলছি। তাঁদের কুরআন ও সুন্নাহ সমর্থিত সীরাতের মাধ্যমে আমরা সঠিক পথ-নির্দেশনা লাভ করছি। আল্লাহর আপরিসীম নেয়ামতের শুকরিয়া জ্ঞাপনের লক্ষ্যে এবং প্রতিটি মুমিনের জন্য যে পথ অবলম্বন করা অপরিহার্য তা বর্ণনা করার উদ্দেশ্যেই আমাদের এ নিবেদন।
আমরা আল্লাহ তা‘আলার কাছে এ প্রার্থনাই করছি, তিনি যেন আমাদেরকে এবং আমাদের মুসলিম ভাইদেরকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে দুনিয়া এবং আখেরাতের জিন্দিগীতে দৃঢ়তা ও স্থিতিশীলতা দান করেন। আমাদেরকে যেন তাঁর অবারিত রহমত দান করেন। মূলত: তিনিই হচ্ছেন অবারিত রহমত দানকারী।
বিষয়টির গুরুত্ব এবং মানুষের মধ্যে এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন মত-পার্থক্যের কারণে সংক্ষেপে আমাদের আক্বীদা তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদার উপর দু’কলম লিখতে মনস্থ করেছি। আমাদের আক্বীদা হচ্ছে: আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ফিরিশ্তা, আসমানী কিতাব, নবী-রাসূল, আখেরাত এবং তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর ঈমান আনা।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে এ প্রার্থনাই করছি তিনি যেন আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াসকে তাঁর সন্তুষ্টির জন্য গ্রহণ করেন। আর মানুষের জন্য করেন কল্যাণকর এবং উপকারী।
আমাদের আক্বীদা হচ্ছে: আল্লাহ তা‘আলা, তাঁর সকল ফিরিশ্তা, আসমানী কিতাব, নবী-রাসূল, আখেরাত এবং তাকদীরের ভাল-মন্দের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখা।
আমরা আল্লাহ তা‘আলার রুবুবিয়্যাতে ঈমান আনি। এর অর্থ হচ্ছে, তিনিই হচ্ছেন রব; খালিক [সৃষ্টিকর্তা] বাদশাহ, সকল কাজেরই মহানিয়ন্ত্রক।
আমরা আল্লাহর তা‘আলার উলুহিয়্যাতে ঈমান আনি। যার অর্থ হচেছ, তিনিই হচ্ছেন সত্য ইলাহ। তিনি ব্যতীত সব মা‘বুদই বাতিল ও অসত্য।
আমরা আল্লাহ তা‘আলার সব পবিত্র নাম ও সিফাত ঈমান আনি। অর্থাৎ তাঁর বহু পবিত্র নাম ও উন্নত সিফাতে কামেলা অর্থাৎ পরিপূর্ণ গুণাবলী রয়েছে।
[আল্লাহ] “আসমান ও যমীন এবং এ দু’টির মাঝখানে যা আছে সব কিছুরই তিনি রব। অতএব তুমি তাঁরই ইবাদত করো এবং ইবাদতের পথে ধৈর্যের মাধ্যমে অবিচল থাকো। তাঁর সমতুল্য কোন সত্তার কথা তুমি জান কি?” [সূরা মারইয়াম: ৬৫]।
আল্লাহর জ্ঞান, সাম্রাজ্য ও ক্ষমতা
আমরা ঈমান আনি যে,
﴿ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡحَيُّ ٱلۡقَيُّومُۚ لَا تَأۡخُذُهُۥ سِنَةٞ وَلَا نَوۡمٞۚ لَّهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِۗ مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ يَعۡلَمُ مَا بَيۡنَ أَيۡدِيهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيۡءٖ مِّنۡ عِلۡمِهِۦٓ إِلَّا بِمَا شَآءَۚ وَسِعَ كُرۡسِيُّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَۖ وَلَا ئَُودُهُۥ حِفۡظُهُمَاۚ وَهُوَ ٱلۡعَلِيُّ ٱلۡعَظِيمُ ٢٥٥﴾ [البقرة:255]
“আল্লাহ সেই চিরঞ্জীব শাশ্বত সত্তা, যিনি সমস্ত বিশ্বচরাচরকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে আছেন, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তন্দ্রা তাঁকে স্পর্শ করতে পারে না। তিনি নিদ্রাও যান না। আসমান ও যমিনে যা কিছু আছে সবই তাঁর মালিকানাধীন। এমন কে আছে যে তাঁর দরবারে তাঁরই অনুমতি ব্যতীত সুপারিশ করতে পারে? সামনে পিছনে যা কিছু আছে সবই তিনি জানেন। তাঁর জানা বিষয়সমূহের কোন জিনিসই তাদের জ্ঞানসীমার আয়ত্বাধীন হতে পারে না। অবশ্য কোন বিষয়ের জ্ঞান যদি তিনি নিজেই কাউকে জানাতে চান (তবে তা অন্য কথা)। তাঁর কুরসী সমগ্র আসমান ও যমীনকে ঘিরে আছে। আসমান ও যমীনের রক্ষণ-বেক্ষণ তাঁকে ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত করে দিতে পারে না। বস্তুত: তিনিই হচ্ছেন এক সর্বোচ্চ মহান শ্রেষ্ঠতম সত্তা”। [সূরা আল-বাকারাহ: ২৫৫]
আমরা ঈমান আনি—
﴿هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِي لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ عَٰلِمُ ٱلۡغَيۡبِ وَٱلشَّهَٰدَةِۖ هُوَ ٱلرَّحۡمَٰنُ ٱلرَّحِيمُ ٢٢ هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِي لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡقُدُّوسُ ٱلسَّلَٰمُ ٱلۡمُؤۡمِنُ ٱلۡمُهَيۡمِنُ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡجَبَّارُ ٱلۡمُتَكَبِّرُۚ سُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٢٣ هُوَ ٱللَّهُ ٱلۡخَٰلِقُ ٱلۡبَارِئُ ٱلۡمُصَوِّرُۖ لَهُ ٱلۡأَسۡمَآءُ ٱلۡحُسۡنَىٰۚ يُسَبِّحُ لَهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ وَهُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ ٢٤﴾ [الحشر : 22-24]
“তিনিই আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই। গোপন ও প্রকাশ্য সব কিছুই তিনি জানেন। তিনিই রহমান ও রহীম। তিনিই আল্লাহ যিনি ছাড়া কোন হক ইলাহ নেই। তিনি বাদশাহ। অতীব মহান ও পবিত্র। শান্তির ধারক। নিরাপত্তার আঁধার। রক্ষণাবেক্ষণকারী। তিনি পরাক্রমশালী, সর্বজয়ী, মহাশক্তিধর এবং নিজ বড়ত্ব গ্রহণকারী। লোকেরা যেসব শিরক করছে, তা থেকে আল্লাহ সম্পূর্ণ পবিত্র। তিনিই আল্লাহ যিনি সৃষ্টিকর্তা, পরিকল্পনাকারী, আকার আকৃতি রচনাকারী। তাঁর অনেক সুন্দর-সুন্দর নাম রয়েছে। আসমান ও যমিনে যা কিছু আছে সব কিছুই তাঁর প্রশংসা করে। তিনি অতীব পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” [হাশর : ২২-২৪]
আমরা ঈমান আনি যে, আসমান ও যমীনের রাজত্ব একমাত্র আল্লাহর।
﴿يَخۡلُقُ مَا يَشَآءُۚ يَهَبُ لِمَن يَشَآءُ إِنَٰثٗا وَيَهَبُ لِمَن يَشَآءُ ٱلذُّكُورَ ٤٩ أَوۡ يُزَوِّجُهُمۡ ذُكۡرَانٗا وَإِنَٰثٗاۖ وَيَجۡعَلُ مَن يَشَآءُ عَقِيمًاۚ إِنَّهُۥ عَلِيمٞ قَدِيرٞ ٥٠﴾ [الشورى: 49-50]
“তিনি যাই চান, সৃষ্টি করেন। যাকে চান কন্যা-সন্তান দান করেন, যাকে চান পুত্র-সন্তান দান করেন। আবার যাকে চান পুত্র-কন্যা উভয় রকমের সন্তানই দান করেন। আর যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। তিনি সব কিছুই জানেন এবং সব বিষয়েই ক্ষমতাবান।” [শূরা : ৪৯-৫০]
আমরা ঈমান আনি যে,
﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ ١١ لَهُۥ مَقَالِيدُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ يَبۡسُطُ ٱلرِّزۡقَ لِمَن يَشَآءُ وَيَقۡدِرُۚ إِنَّهُۥ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٞ ١٢ ﴾ [الشورى: 11-12]
“কোন জিনিসই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব কিছুই শুনেন ও দেখেন। আকাশমণ্ডল ও যমীনের সকল ধনভাণ্ডারের চাবি তাঁরই কাছে। যাকে তিনি চান প্রচুর রিজিক দান করেন, আর যাকে চান পরিমিত দান করেন। তিনি সব বিষয়ে জ্ঞান রাখেন।” [শূরা : ১১-১২]
আল্লাহ রিযিকদাতা
আমরা আরও ঈমান আনি যে,
﴿وَمَا مِن دَآبَّةٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا عَلَى ٱللَّهِ رِزۡقُهَا وَيَعۡلَمُ مُسۡتَقَرَّهَا وَمُسۡتَوۡدَعَهَاۚ كُلّٞ فِي كِتَٰبٖ مُّبِينٖ ٦ ﴾ [هود: 6]
“যমীনে বিচরণশীল এমন কোন জীব নেই, যার রিজিকের ব্যবস্থা আল্লাহর উপর নয় এবং যার স্থায়ী অস্থায়ী অবস্থান সম্পর্কে তিনি অবহিত নন। এসব কিছুই এক সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।” [হুদ : ৬]
আল্লাহ আলিমুল গায়েব
আমরা ঈমান আনি যে,
﴿وَعِندَهُۥ مَفَاتِحُ ٱلۡغَيۡبِ لَا يَعۡلَمُهَآ إِلَّا هُوَۚ وَيَعۡلَمُ مَا فِي ٱلۡبَرِّ وَٱلۡبَحۡرِۚ وَمَا تَسۡقُطُ مِن وَرَقَةٍ إِلَّا يَعۡلَمُهَا وَلَا حَبَّةٖ فِي ظُلُمَٰتِ ٱلۡأَرۡضِ وَلَا رَطۡبٖ وَلَا يَابِسٍ إِلَّا فِي كِتَٰبٖ مُّبِينٖ ٥٩ ﴾ [الأنعام:59]
“গায়েবের সব চাবিকাঠি তাঁরই কাছে রয়েছে। তিনি ছাড়া আর কেউ তা জানে না। স্থল ও জল ভাগে যা কিছু আছে তার সবই তিনি জানেন। বৃক্ষচ্যুত একটি পাতাও এমন নেই যার সম্পর্কে আল্লাহ জানেন না। যমীনের অন্ধকারে কোন শস্য, কোন আর্দ্র, কোন শুষ্ক জিনিস সবই এক সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে।” [আন‘আম : ৫৯]
আমরা ঈমান আনি যে,
﴿ إِنَّ ٱللَّهَ عِندَهُۥ عِلۡمُ ٱلسَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ ٱلۡغَيۡثَ وَيَعۡلَمُ مَا فِي ٱلۡأَرۡحَامِۖ وَمَا تَدۡرِي نَفۡسٞ مَّاذَا تَكۡسِبُ غَدٗاۖ وَمَا تَدۡرِي نَفۡسُۢ بِأَيِّ أَرۡضٖ تَمُوتُۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرُۢ ٣٤ ﴾ [لقمان: 34]
“কেয়ামতের সময়ের জ্ঞান আল্লাহরই কাছে রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন। তিনিই জানেন গর্ভে কী আছে। কেউ জানে না আগামী কাল সে কী কামাই করবে। না কেউ জানে তার মৃত্যু হবে কোন যমীনে। আল্লাহই সব কিছু জানেন এবং সব বিষয়েই তিনি ওয়াকিফহাল।” [লোকমান : ৩৪]
আল্লাহ কথা বলেন
আমরা ঈমান আনি যে, আল্লাহ তা‘আলা কথা বলেন যা বলেতে চান, যখন চান এবং যেভাবে চান।
﴿ وَكَلَّمَ ٱللَّهُ مُوسَىٰ تَكۡلِيمٗا ١٦٤﴾ [النساء: 164]
“আল্লাহ মূসার সাথে কথা বলেছেন, যেভাবে কথা বলা হয়ে থাকে।” [নিসা : ১৬৪]
﴿وَلَمَّا جَآءَ مُوسَىٰ لِمِيقَٰتِنَا وَكَلَّمَهُۥ رَبُّهُۥ﴾ [الأعراف: 143]
“যখন মূসা আমার নির্দিষ্ট সময়ে এসে পৌছলো এবং তার রব তার সাথে কথা বললেন”। [আ‘রাফ : ১৪৩]
﴿وَنَٰدَيۡنَٰهُ مِن جَانِبِ ٱلطُّورِ ٱلۡأَيۡمَنِ وَقَرَّبۡنَٰهُ نَجِيّٗا ٥٢﴾ [مريم: 52]
“আমি মূসাকে তুর [পাহাড়] এর ডান দিক থেকে ডাকলাম এবং গোপন কথা বার্তার দ্বারা তাকে নৈকট্য দান করলাম।” [মারইয়াম: ৫২]
আমরা একথা ঈমান রাখি যে,
﴿قُل لَّوۡ كَانَ ٱلۡبَحۡرُ مِدَادٗا لِّكَلِمَٰتِ رَبِّي لَنَفِدَ ٱلۡبَحۡرُ قَبۡلَ أَن تَنفَدَ كَلِمَٰتُ رَبِّي﴾ [الكهف: 109]
“সমুদ্রগুলো যদি আমার রবের কথাসমূহ লেখার জন্য কালি হয়ে যেতো তাহলে আমার রবের কথা শেষ হওয়ার আগেই কালি শেষ হয়ে যেতো।” [কাহ্ফ : ১০৯]
﴿وَلَوۡ أَنَّمَا فِي ٱلۡأَرۡضِ مِن شَجَرَةٍ أَقۡلَٰمٞ وَٱلۡبَحۡرُ يَمُدُّهُۥ مِنۢ بَعۡدِهِۦ سَبۡعَةُ أَبۡحُرٖ مَّا نَفِدَتۡ كَلِمَٰتُ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٞ ٢٧﴾ [لقمان: 27]
“যমীনে যত গাছ আছে, তা সবই যদি কলম হয়ে যেতো, আর সমুদ্র্ আরও সাতটি সমুদ্র্ একে কালি সরবরাহ করতো, তাহলেও আল্লাহর কথাগুলো শেষ হবে না। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” [লোকমান: ২৭]
আমরা ঈমান আনি যে, সিদ্ধান্ত ও কোন খবর দানের ব্যাপারে আল্লাহর কালামই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি সত্য ও সঠিক এবং পূর্ণতার দাবিদার। হুকুম আহকামের ক্ষেত্রে তা সবচেয়ে বেশি ন্যায়ভিত্তিক ও ইনসাফপূর্ণ। বর্ণনার দিক থেকে তা সবচেয়ে বেশি সুন্দর। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿وَتَمَّتۡ كَلِمَتُ رَبِّكَ صِدۡقٗا وَعَدۡلٗاۚ﴾ [الأنعام: 115]
“তোমরা রবের কথা সত্যতা ও ইনসাফের দিক থেকে পূর্ণতা লাভ করেছে।” [আন‘আম : ১১৫]
﴿وَمَنۡ أَصۡدَقُ مِنَ ٱللَّهِ حَدِيثٗا ٨٧﴾ [النساء: 87]
“বস্তুত আল্লাহর কথা অপেক্ষা অধিক সত্য কথা আর কার হতে পারে?” [নিসা : ৮৭]
কুরআন আল্লাহর কালাম
আমরা ঈমান আনি যে, কুরআনে কারীম হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলার পবিত্র কালাম। এর মাধ্যমে তিনি হক কথা বলেছেন এবং জিবরাইল [আলাইহিস সালাম] এর কাছে তা অর্পণ করেছেন। এরপর জিবরাইল [আলাইহিস সালাম] সেই অর্পিত কথাগুলো নাযিল করেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অন্তরে।