হাদীসের বিশাল রত্নভান্ডার আমাদের সামনে আজও রয়েছে। কোরআনের পরেই তো হাদিসের স্থান। হাদিস হলো কোরআন বা ইসলামি শরীয়তের পূর্ণ ব্যাখ্যা-ভান্ডার। রাসূল সাঃ এর জীবনচরিত। সুতরাং যে বিদ্যা শিক্ষা করা ইসলামে ফরজ, তার মধ্যে হাদিস বিদ্যাও রয়েছে। এটাও আমাদের জন্য শিক্ষা করা ফরজ। তাই আমরা হাদিস অধ্যয়ণ করি। এ নিয়ে গবেষণা করি।
হাদিসের অনেক কিতাবই তো রয়েছে। তিরমিযী শলিফ তার নিজস্ব মর্যাদা নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে এবং চিরকাল থাকবে। দরসে তিরমিযী নামে তারই ব্যাখ্যা গ্রন্থ লিখেছেন পাকিস্তানের মুফতি আল্লামা তাকি উসামানি সাহেব। লেখকের এই কিতাবটি সাধারণ-অসাধারণ সবার কাছেই প্রয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের কাছে। তিরমিযী পড়া মানেই তো তার ব্যাখ্যা গ্রন্থ দরসে তিরমিযী সংগে থাকবেই।
কিতাবটি মূল ভাষা উর্দু হওয়ার কারণে অনেকে অনেক কিছুই তা থেকে উদ্ধার করতে পারেন না। তাই আমরা চেষ্টা করেছি একে সহজ বাক্যে বাংলায় ভাষান্তর করতে। অনুবাদ করার সময় গ্রন্থটিকে ছাত্রদের উপযোগী করে তোলার চেষ্ট করা হয়েছে। জটিল মাসয়ালা-মাসায়েলগুলো ছাত্ররা যেন সহজেই বুঝতে পারে। সেই দিকেও লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আরজ, এলমিভাবে মানুষ যতই উচ্চ মর্যাদা লাভ করুক, হাদিসের মূলপাঠ, এর সনদ এবং সংশ্লিষ্ট আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে পান্ডিত্য ও বিশেষজ্ঞতা যতোই অর্জিত হোক, কিন্তু এই কিতাবি এলেম একটি বাহ্যিক খোলস মাত্র। এর সাথে যদি আমলের স্প্রিট না থাকে, তাহলে আল্রাহ তায়ালার নিকট এর কানাকড়িও মূল্য নেই।
হাদিস পড়ার আসল উদ্দেশ্য হলো, সুন্নাতের অনুসরণের প্রতি গুরুত্বারোপ সৃষ্টি হওয়া। আমলের আগ্রহ তৈরী হওয়া। আল্লাহর ভা, পরকালের চিন্তা, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক । এবং গোনাহ থেকে পরহেজের ব্যাপারে তরাক্কি লাভ হওয়া। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাঃ এর সাথে মহব্বত বৃদ্ধি পাওয়া। হাদিস পড়াকালে যদি এসব বিষয় সৃষ্টি না হয়, তাহলে কেউ এলমিভাবে যতোই বিষয়াবলি মুখস্থ রাখুক, সে মূলত হাদিসের কোন ফায়দাই অর্জন করেনি।