ভারতবর্ষে মুসলিম শাসন সুচিত হওয়ার পূর্বে রাজা ভীম মুযাফফর নগর জেলায় নিজের নামে একটি উপশহর গোড়াপত্তন করেন। থানাভীম পরবর্তীতে এখানে মুসলমানদের আগমন ও বসবাস শুরু হলে এলাকাটির নাম রাখা হয় মুহাম্মদপুর। তবে এ নামটি প্রসার পায়নি। পুরাতন নামটিই থেকে যায়।
তবে কালক্রমে থানাভীম থেকে হয়ে যায় থানা ভবন। যুগে যুগে এ উপশহরটি উপহার দিয়েছে অনেক কালজয়ী ব্যক্তিত্ব। এখানকার মুসলমানগন অভিজাত, কুলীন ও জ্ঞানীনুরাগী হিসেবে প্রসিদ্ধ। হাকিমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলি থানভি রহ.-এর পিতৃপুরুষগণ কাজ থেকে কয়েক শতাব্দী পূর্বে থানাভবনে এসে বসবাস শুরু করেন। পিতৃকুলের পূর্বসূরীগণ কর্নাল জেলার থানেশ্বর থেকে হিজরত করে এখানে এসে থিতু হন।
বংশীয়ভাবে তারা ছিলেন ফারুকী। আর মাতৃকুলের পূর্বপুরুষগণ ঝনঝানা অঞ্চল থেকে হিজরত করে থানাববনে চলে আসেন। বংশীয়ভাবে তারা ছিলেন আলাঈ। হাকিমুল উম্মাতের শ্রদ্ধেয় পিতা মরহুম আবদুল হক সাহেব একজন বিত্তসম্পন্ন গ্রামপতি ছিলেন। প্রচুর জায়গা -সম্পত্তি ছিলো। দান-খয়রাত করতে কার্পণ্য করতেন না। মিরাঠের বেশ বড় একটি এলাকা তার অধীনে ছিলো। ফারসি ভাষায় গভীর দক্ষতার অধিকারী ছিলেন।
যদিও কুরআন কারীমের হাফিজ ছিলেন না, তবে নাজেরা ছিল খুবই শক্তিশালী। মেধা ও দূরদর্শিতা ছিল অত্যন্ত প্রখর । যার অসামান্য প্রমাণ হল, তিনি তার দুই ছেলের যোগ্যতা ও মানসিক অভিরুটি শৈশবেই ধরে ফেলতে পেরেছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে বড় ছেলে হাকিমুল উম্মত রহ. কে আরবি ও দীনিয়াত এবং ছোট ছেলে মরহুম আকবর আলিকে ইংরেজী ও পার্থিব শিক্ষা অর্জনে নিমগ্ন করেছিলেন।
এই পৃথক শিক্ষা প্রদানের ওপর তার এতোটাই আস্থা ছিলো যে, একবার তাকেঁ তার ভাবী সাহেবা জিজ্ঞেস করেছিলেন, ভাইজান! আপনি তো ছোট ছেলেকে ইংরেজী শেখাচ্ছেন, ভালো কথা । কামাই করে খেতে পারবে। কিন্তু বড় ছেলেকে যে আরবী পড়াচ্ছেন; ও কোথকে খাবে? জীবন কীভাবে কাটাবে তখন তিনি প্রচন্ড আবেগ আস্তার সঙ্গে উত্তর দিয়েছিলেন, আল্লাহর শপথ আপনি যাকে উপার্জন সক্ষম মনে করছেন, তার মতো অনেকে ও জুতো ধরে ধরে ঘুরবে।