লক্ষ্যনীয় যে, আল্লাহপাকন গোস্বাকে দমন ও সংবরণ করিতে বলিয়াছেন, কিন্তু উহার মুলোৎপাটনের হুকুম করেন নাই। অর্থাৎ গোস্বা আসিলে তাহাকে দমাইয়া রাখিবে; বাস্তবায়িত করিবেনা। কিন্তু এই কথা বলেন নাই যে, গোস্বাকে অন্তর হইতে সমূলে বিনাশ করিয়া দাও। ক্রোধ- শক্তিকে সমুলে বিনাশ করা যদি উদ্দেশ্য হইত, তাহা হইলে আল্লাহপাক এর স্থলে গোস্বা সংবণের স্থলে গোস্বাকে উৎপাটনের কথা নাযিল করতেন।
মুফাচ্ছিরগণ। বলিয়াছেনঃ ইহার কারণ এই যে, গোস্বাকে সমূলে ধ্বংস করিয়া দেওয়া আল্লাহ তাআলার অভিপ্রায় নহে। কারণ, অন্তরে যদি রাগ-রোষ বা ক্রোধ শক্তি একেবারেই না থাকে ।
তবে কাফেরদের সহিত মোকাবিলার সময় কোন শক্তির বলে জেহাদ করিবে? কিরূপে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোর হইতে পারিবে বস্তুত আল্লাহপাক নিজেই মানুষের মধ্যে গোস্বা-ক্রোধ দিয়া রাখিয়াছেন, যাহাতে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে তাহা ব্যবহার করা যায়। যেমন, দ্বীনের দুশমনদের সঙ্গে যদি যুদ্ধের প্রয়োজন দেখা দেয় তখন আল্লাহর দুশমনদের বিরুদ্ধে এই শক্তির খুব সদ্ব্যবহার করিবে।
কাফেরদের সহিত যুদ্ধের ময়দানে অবতীর্ণ হইয়া যদি কেহ এই কথা বলে যে, এই নিকৃষ্ট অধম নালায়েক বান্দা আপনাদের দরবারে হাযির, তবে ইহা কি তাহার জনৗ সমীচীন হইবে? এরূপ বিনয় ও নরম উক্তি সেখানে সম্পূর্ন হারাম। সেক্ষেত্রে বরং সদর্পে-সগর্বে শির উঁচু করিয়া এই ঘোষণা দিবেযে, আছে কোন যোদ্ধা যে আমার সহিত শক্তি পরীক্ষার হিম্মত রাখে? যদি থাক তবে আস, মোকালিলা করে।
কিন্তু যে গোস্বা শুধু নিজের জন্য, মনের জিদ ও ঝাল মিটাইবার জন্য, আল্লাহর পেয়ারা বান্দাঘন সেখানে গোস্বাকে হযম করিয়া ফেলেন, দমাইয়অ নিয়ন্ত্রিত করিয়া রাখেন। বস্তুত: গোস্বার অশ্বকে যাহারা নিয়ন্ত্রণে রাখিতে সক্ষম হয়, তাহারা আল্লাহপাকের মহব্বতের পাত্র ও রহমরেত উপযুক্ত হইয়া যায়। কিন্তু আল্লাহকে রাযী-খুশি করার জন্য সে তাহার ঐ সকল কামনা-বাসনা , আবেগ -আরযূকে খুন করিতে থাকিবে।