মুখস্থ করা সহজ কিন্তু উপলদ্ধির সাথে অনুধাবন করে অর্জিত জ্ঞানের ওপর আমল করা কঠিন হলেও এর মধ্যে রয়েছে জীবনের সত্যিকার অর্জন ও প্রশান্তি। এমন একটি প্রশান্তির বাণী নিয়ে এসেছে বিশ্ববাসীর কাছে আল-কুরআন। তাই আল কুরআনেই ঘোষণা হয়েছে। “ওয়ামাহুয়া ইল্লা যিকরুল লিল আলামীন” অর্থ- ‘অথচ এই কিতাব কুরআন সারা জাহানের জন্য উপদেশ বাণী’। আল কুরআন শুধু মুখস্ত করে, তেলাওয়াতের সওয়াব হাসিলের জন্য অবতীর্ণ হয়নি। একদিকে ‘কুরআন উপদেশবাণী’ অন্যদিকে ‘কুরআন বিজ্ঞানময়’ সর্বোপরি- আল কুরআন নিজেই একটি মু’জিযা।মু’জিযার শাব্দিক অর্থ- “অভিভূতকারী”। অলৌকিক কর্মের পারিভাষিক শব্দরূপে ‘মু’জিযা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। মক্কার অবিশ্বাসীরা হযরত মুহাম্মদ (সা.) নিকট বিশ্বাস স্থাপনের শর্তস্বরূপ কয়েকটি অলৌকিক কার্য সম্পাদনের দাবি করে। সূরা বনী ইসরাইলের ৯০ নং আয়াতে উল্লেখ আছে- তাদের দাবিগুলো ছিল:
১. কখনও আমরা তোমার ওপর ঈমান আনব না, যতক্ষণ না তুমি আমাদের জন্য এ জমীন থেকে এক প্রস্রবন (বারা) প্রবাহিত না করবে।
২. খেজুরের অথবা আঙ্গুরের একটা বাগান তৈরি, তাতে অসংখ্যা নদী-নালা বইয়ে দিবে।
৩. কিয়ামতের আলামত স্বরূপ আসমানকে টুকরো টুকরো করে ফেলা এবং তাদের (কাফেরদের) সমানে স্বয়ং আল্লাহ ও ফেরেশতাদের এনে দাঁড় করানো।কাফেরদের দাবির বিষয়ে বনী ইসরাইল ৯৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে- “কিংবা থাকবে তোমার স্বর্ণ নির্মিত ঘর; অথবা তুমি আরোহন করবে আসমানে- এর উত্তরে মহান আল্লাহতায়ালা হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে আদেশ করেন, “বল! মহান পবিত্র আমার মালিক (আল্লাহ তায়ালা) আমিতো কেবল (তার পক্ষ থেকে) একজন মানুষ, একজন রাসূল বৈ কিছুই নই।”২
ওয়ালীদের দ্বারা অলৌকিক কার্য সম্পাদন হলে তাকে কারামাত বলে। মু’জিযা সম্পর্কে তাক্তাযানী এভাবে এর ব্যাখ্যা করেছেন- মু’জিযা প্রচলিত সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম, এটা একজন নবুওয়াতের দাবিদারের দ্বারা প্রকাশ পায়, নবুওয়াত অস্বীকারকারীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি এটা সম্পাদন করেন এবং কার্যটির প্রকৃতি এমন যে, অস্বীকারকারীদের পক্ষে সেরূপ কার্য করা অসম্ভব। এটা আল্লাহ রাসূলের সত্যতা প্রমাণের জন্য আল্লাহর সাক্ষ্য। আল্-ঈজীর মাওয়াকি’ফে মু’জিযার পরিপূর্ণ ও সুসংঘবদ্ধ সংজ্ঞা দিয়েছেন। তিনি বলেন- যিনি আল্লাহর নবী বলে দাবি করেন, তাঁর সত্যতা প্রমাণ করাই মু’জিযার উদ্দেশ্য। তাছাড়া তিনি এ সব শর্ত উল্লেখ করেন-