দৃষ্টির লাগামহীনতাই অধিকাংশ অশ্লীলতার প্রধান উৎস। এজন্য গবেষকরা বলে থাকেন, কুদৃষ্টি সকল অনিষ্টের মূল। এদুটি ছিদ্র দিয়েই ফেতনার বন্যা ছুটে আসে। সমাজের মাঝে অবস্থিত থৈ থৈ করা নগ্নতার মূল কারণও এ দুটি ছিদ্র। তাই ইসলাম ছিদ্র দুটির ওপর পাহারাদর নিযুক্ত করে দিয়েছে। প্রত্যেক মুমিনকে দৃষ্টি অবনত রাখার নির্দেশ এটাও ইসলামের ফলপ্রসূ শিক্ষারই চমৎকার বহিঃপ্রকাশ।
এতে পরনীরীর প্রতি দৃষ্টি যায় না, যৌনতার উদ্দামতা দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে না। বাশঁও থাকে না, বাশিঁও বাজে না। নীতির কথা হল, Nip the evil in the bud,অর্থাৎ মনের উৎসটা শেষ করে দাও।
অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, যাদের দৃষ্টি নিয়ন্ত্রিত নয় তাদের মাঝে জৈবিকচাহিদা আগুন জ্বলতে থাকে। এই লাগামহীনতাই মানুষকে ধীরে ধীরে বেহায়াপনার অন্ধকার জগতের দিকে ঠেলে দেয়। দৃষ্টিসংরক্ষণে পবিত্র কুরআন কী বলে? এ সুবাদে পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন- হে নবী! আপনি মুমিনদেরকে বলে দিন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।
এতে তাদের জন্য রয়েছে পবিত্রতা। তারা যা করে মহান আল্লাহ তা সম্পর্কে সম্যক অবগত। (সূরা নূর:৩০)। পবিত্র কুরআনের আয়াতটি মুমিনদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। তাফসীরবিশারদগণ লিখেছেন, আয়াতটিতে রয়েছে শিষ্টাচার, সতর্কতা ও চ্যালেঞ্জের বিবরণ। নিম্নে তা উপস্থাপন করা হল- (ক) আয়াতের প্রথমাংশে রয়েছে শিষ্টাচারের বিবরণ।
অর্থাৎ যেসব বস্তু দেখা মুমিনদের জন্য অবৈধ, তা থেকে যেন দৃষ্টিকে অবনত রাখে। গোলামের কৃতিত্ব হল মনিবের আনুগত্য করা। আয়াতটিতে এ শিক্ষাও রয়েছে যে, দৃষ্টির হেফাজত প্রথম কাজ। লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ সর্বশেষ কাজ। একটির জন্য অপরটি অপরিহার্য। সুতরাং দৃষ্টির লাগাম ধরতে না পারলে লজ্জাস্থানও অনিবার্যভাবে নিয়ন্ত্রণের গন্ডিতে রাখা যায় না।
(খ) অর্থাৎ এতে রয়েছে তাদের জন্য পবিত্রতা। আয়াতের এ অংশে রয়েছে সতর্কতা। দৃষ্টির হেফাজতে রয়েছে অন্তরের পবিত্রতা। ফলে গুনাহ কুমন্ত্রণা অন্তরে ইতিউতি করে না। ইবাদতে মনোযোগ আসে।