সুনানে আবু দাউদ থেকে হাসান বর্নিত; কোন একটি যুদ্ধের সময় নবী (সাঃ) দুজন পাহারাদার নিয়োগ করেন, তাদের একজন ছিলেন মুহাজিরীন, আরেকজন ছিলেন আনসার। একটা সময় আনসারী সাহাবী নামাজের জন্য উঠে পড়লেন অপরদিকে মুহাজিরীন সাহাবী তখন ক্লান্তিতে তন্দ্রা মতো এসেছিলেন।
এই সময় প্রতিপক্ষের এক মুশরিক এই অবস্থা দেখে সুযোগ বুঝে আনসার সাহাবীর দিকে তীর মারেন। এটা তারঁ গায়ে লাগে, কিন্তু তবুও কষ্ট করে তীর বের করে রক্তাক্ত অবস্থায় নামাজ চালিয়ে গেলেন। এটা দেখে ঐ মুশরিক আবার তীর নিক্ষেপ করলেন। আবারও আনসার সাহাবী তীরটি অপসারণ করে নামাজ চালিয়ে গেলেন।
কিন্তু যখন তৃতীয় তীর আঘাত হানল; তিনি আর দাড়িয়ে থাকতে পালেন না এবং তিনি রুকু এবং সেজদায় চলে গেলেন, এর মাঝে মুহাজিরীর সাহাবীর ঘুম ভেঙ্গে যায় (মুররিক তা দেখে পালিয়ে যায়) এবং তার সাথীর রক্তাক্ত অবস্থা দেখে চেঁচিয়ে উঠে বললেন সুবহান-আল্লাহ!
যখন প্রথম সে তোমাকে আঘাত করেছিলো আমাকে কেন ডাকলে না? আনসারী সাহাবীর উত্তর ছিল, আমি তখন এমন একটি সুরা তিলাওয়াত করছিলাম যা আমি ভালবাসি, আর আমি সেটা থামাতে চাচ্চিলাম না। আল্লাহ আকবার, আমাদের পক্ষে কী কল্পনা করা সম্ভব কী পরিমান আবেগ ও নিষ্ঠা ছিলো তাঁর নামাজে?
নামাজ হল সর্বোত্তম ইবাতদ। যখন কেউ নামাজ শেষ করার উদ্দেশ্যে সালাম ফেরায়(তাসলিম) তখন সে নিশ্চিত ভাবেই এক প্রশান্তি লাভ করে। ইবনে আল যাওজী নামাজের ব্যাপারে বলেন: আমরা এমন এক উদ্যানে অবস্থান করি যেখানে আমাদের খাদ্য হল খুশু আর পানীয় হল অশ্রু যে নামাজে পূর্ণভাবে আরাধনা করে তার আত্মা তার কাছে আর থাকেনা; যেমন ইবনে তায়মিয়্যাহ বলেন, তার রুহ আসলে আল্লাহর আরশের তাওয়াফ করতে থাকে।
কেউ একথা বলতে পারেন যে এরাতো আগের জামানার মানষ্ এখন কেউ এরকম অনুভব করেন না। কিন্তু এ কথা মোটেও সত্য নয়; যে কেউ নামাযের এই অমৃতসুধার সন্ধান পেতে পারে, আর এর জন্য দরকার নামাজের গুরুত্ব অনুধাবন করা এবং খুশু অর্জনের রসহ্য উন্মোচন করা।