আবুল ফিদা ইসমাইল ইবনে উমর ইবনে দু ইবনে কাসীর ইবনে দিরা আল-কোরাইশি। তিনি কোরাইশের সম্ভ্রান্ত গোত্রের বনি হাসালা শাখার বুসরার অন্তর্গত মিজদাল নামক জনপদে ৭০১ হিজরি সনে জন্মগ্রহন করেন। তারঁ পিতা খবিত শিহাবুদ্দীন আবু হাফস উমর ইবনে কাসীর রহ. । তিনি একজন স্বনামধন্য আলোম ও কবি ছিলেন।
শৈশব থেকেই ইবনে কাসীর রহ. প্রখর মেধাশক্তির অধিকারী ছিলেন। দশ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই তিনি কোরআর মাজিদ হেফয করেন। ইবনে কাসীর রহ. তারঁ সহোদর আবদুল ওয়াহাব রহ.-এর তত্ত্বাবধানে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন।
তিনি হিজরী ৮ম শতাব্দীতে মামলুক সুলতানদের শাসনামলে তারঁ যৌবনকাল অতিবাহিত করেন। তাতারীদের আক্রমণ একাধিক দূর্ভিক্ষ, হৃদয় বিদারক দুযোর্গগুলো তিনি স্বচক্ষে দেখেন। তিনি ফিরিঙ্গীদের সঙ্গে সংঘটিত ক্রসেড যুদ্ধগুলোও দেখেছেন। তৎকালীন সময়ের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস শায়খ মিযযী রহ-এর কাছে তিনি হাদিস শাস্ত্র অধ্যায়ন করেন।
তিনি তারঁ সমসাময়িক যুগের শ্রেষ্ঠ ইতিহাসবিদ, হাদিস বিশারদ, তাফসিরকারক ও গণিত শাস্ত্রবিদ হিসেবে প্রসিদ্ধ হয়েছিলেন। আল্লামা সুয়ুতী রহ. তার সম্পর্কে বলেছেন, তার তাফসির গ্রন্থটি অভূতপূর্ব। এ পদ্ধতিতে আর কোনো তাফসি গ্রন্থ সংকলিত হয়নি। আল্লামা যাহাবি রহ. এর পর তিনি উম্মুস সাওয়াত তানাক্কুরিয়া মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছ
তিনি ৭৪৮ হিজরী সনে ফাওকানি বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেন। ইবনে কাসীস রহ. বিশেষত ইতিহাস. তাফসির ও হাদিস বিষয়ে প্রচুর গ্রন্থরচনা করেছেন। তারঁ প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ৭টিরও বেশি পাওয়া যায়। তারঁ অপ্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ১২টিরও বেশি সন্ধান পাওয়া যায়।
৭৭৪ হিজরী সনে ২৬ শে শাবান বৃহস্পতিবার এ মহামনীষী বুহুমুখী প্রতিভার অধিকারী আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্যে পাড়ি জমান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তারঁ জানাযায় বহু লোকের সমাগম ঘটে তাকে আল্লামা তাকিউদ্দিন ইবনে তাইমিয়া রহ-এর পাশে দাফন করা হয়।