উভয় জগতে কামিয়াবীর জন্য হক্কানী উলামায়ে কেরাম ও বুযুর্গানে দীনের সাথে মুহাব্বত ও শ্রদ্ধা রাখা জরুরী। আল্লাহ তা‘আলাকে পাওয়া এবং হেদায়েতের উপর কায়েম থাকার জন্য আল্লাহওয়ালাদের সোহবত অপরিহার্য বিষয়। (সুরায়ে তাওবা ১১৯, সূরায়ে নাহল ৪৩)
দীনের খেদমতে নিয়োজিত উলামায়ে কেরামের কখনো সমালোচনা করবে না। এত নিজের দীন ও ঈমানের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়। হ্যাঁ তাদের কোন ভুল ভ্রান্তি থাকতে পারে, তারা তো আর ফেরেশতা নন। তবে তাদের মুরব্বীগণ তাদের সে সব ভুলের সংশোধন করবেন। এটা অন্যদের দায়িত্ব নয়। অধুনা অনেকে উলামায়ে কেরামের ভুল ধরে এবং একা একা গবেষণা করে বা আল্লাহওয়ালাদের সোহবত বঞ্চিত ইসলামী চিন্তাবিদদের অনুসরণ করে দীনদার হতে চায়। এটা গোমরাহী ও দোযখের রাস্তা। তাই এ পথ কখনো অবলম্বন করবে না।
নিঃস্বার্থ ও হক্কানী উলামায়ে কেরামের সাথে পরামর্শক্রমে নিচের কাজগুলো সারাজীবন আনজাম দিতে হবেঃ
ক. ঈমানী বিষয়ের তা‘লীমের মাধ্যমে নিজের ঈমান ও আক্বীদা বিশ্বাসকে সঠিক করতে হবে এবং ঈমানকে কুফরী ও শিরকী বিশ্বাস থেকে হেফাজত করতে হবে এবং ঈমানী দাওয়াতের মাধ্যমে ঈমানকে মজবুত ও পোক্তা করতে হবে। (সূরায়ে নিসা ১১৫, সূরায়ে বাকারা ১৩)
খ. ইবাদাত তথা নামায, রোযা, কুরআনে কারীমের তিলাওয়াত, যাকাত, হজ্জ্ব ইত্যাদি ইবাদাতসমূহ সুন্নাত মুতাবিক সুন্দরভাবে করতে হবে। এর জন্য হক্কানী আলেমদের মজলিসে শরীক হয়ে নামায ও অন্যান্য আমলের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। (সূরায়ে আলে ইমরান ৩১, তিরমিযী ২৬৭৮, মুয়াত্তা মালেক ৪৩৩)
গ. মু‘আমালাত তথা হালাল রিযিকের পাবন্দী করবে। সুতরাং ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবি, কৃষিজীবীসহ সকল স্তরের উপার্জনকারী স্ব-স্ব পেশার হালাল-হারাম কোন হক্কানী মুফতী থেকে ভালভাবে জেনে নিবে। কারো ইনতিকাল হলে মীরাছ বণ্টনে দেরী করবে না, তার কোন ইয়াতীম বাচ্চা থাকলে তার অংশ খুব হেফাজত করবে, তার মাল খাওয়া থেকে কঠোরভাবে বিরত থাকবে। হালাল রিযিক ইবাদতের দিকে ধাবিত করে আর হারাম রিযিক গোনাহের দিকে ধাবিত করে। (সূরায়ে মুমিনূন-৫১, সূরায়ে বাকারাহ-১৬৮)
ঘ. মু‘আশারাত তথা বান্দার হক বিশেষ করে পিতা-মাতা, বিবি বাচ্চা ও অন্যান্যদের হক হক্কানী উলামায়ে কেরাম থেকে জেনে নিয়ে তা পরিপূর্ণভাবে আদায় করবে। কারো হক নষ্ট করবে না। কাউকে অনর্থক কষ্ট দিবে না। এমনকি জীব-জন্তুকে কষ্ট দেয়া থেকেও বিরত থাকবে। নিজের হক উসুলের তুলনায় অন্যের হক আদায় করাকে প্রাধান্য দিবে। আল্লাহর হক আল্লাহ হয়তো মাফ করে দিবেন কিন্তু বান্দার হক তিনি মাফ করবেন না। হাশরের ময়দানে পাওনাদারকে নেকী দিতে হবে কিংবা তার গোনাহের বোঝা বহন করতে হবে। (সূরায়ে নিসা ৩৬, বুখারী শরীফ ৬৪৮৪)