তার আরো একটি বড়ো পরিচয় আছে। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় একজন ক্রীড়াবিদ ছিলেন এক সময়। অ্যাথলেটিক্সের শটপুট এবং ডিসকাস থ্রোতে নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙেছেন পরপর আটবার। জাতীয় পর্যায়ে জেলা ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হন দুবার। জাতীয় ক্রীড়াবিদ হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
নিউইয়র্কে আসার পর সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত হন। ‘সাপ্তাহিক ঠিকানা’র সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এক দশকেরও বেশি সময়। এখন সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্ত রয়েছেন লেখালেখির সঙ্গে। করছেন সমাজসেবা। সাঈদ-উর-রব আপাদমস্তক সমাজ বিনির্মাণে একজন বিশ্বাসী মানুষ।
তার প্রত্যয় আকাশ ছোঁয়া। তিনি সব সময়ই চান এই প্রজন্ম সত্যের সপক্ষে দাঁড়াক। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃত অর্থেই সমৃদ্ধশালী হোক। গড়ে তুলুক বাংলার মাটিতে সোনালি ফসলের গোলা। নিউইয়র্কের ২০০৮ সালের বইমেলায় সাঈদ-উর-রবের একটি বই বেরিয়েছে।
এর নাম হচ্ছে ‘অনিয়মই নিয়ম’। নামটি দেখামাত্র বুঝে নেওয়া যায় সহজে, গ্রন্থটির প্রতিপাদ্য বিষয় কি হতে পারে। যদি কোনো সমাজে অনিয়মই নিয়ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পড়ে, তাহলে কেমন হয় কিংবা হতে পারে সে সমাজের অবস্থা? লেখক সাঈদ-উর-রব খুব দরদ দিয়ে এবং সূক্ষ বিচারে বাংলাদেশ ও বিশ্বের সামগ্রিক বাস্তবতা তুলে ধরতে চেয়েছেন তার এই গ্রন্থের তেরোটি নিবন্ধে। তিনি খুব স্পষ্ট করেই বলতে চেয়েছেন কিছু স্বার্থান্বেষী রাজনীতিবিদের কারণেই আজ বাংলাদেশের এমন বেহাল অবস্থা; বিশ্ব আজ চরম দুঃসময়ের মুখোমুখি। দীর্ঘ প্রথম নিবন্ধটির শিরোনাম, ‘সংবিধান নয় অনিয়মই নিয়ম, কতিপয় স্বার্থপর রাজনীতিবিদের কারণেই ক্ষত-বিক্ষত বাংলাদেশ।
’ বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে সাঁইত্রিশ বছর আগে। তারপরও আজ দুর্নীতি, সন্ত্রাস, স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে কেন সম্মিলিত চেতনা প্রতিষ্ঠিত হলো না, এ প্রশ্ন রেখেছেন লেখক। রাজনীতিবিদদের কেউ কেউ নিজ সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়ে, কৃষক-শ্রমিক-মজুরের সন্তানদেরকে রাজনীতির বলি করবেন কেন? তিনি প্রশ্নগুলো জনমনে জাগিয়ে তুলতে চেয়েছেন। দ্বিতীয় লেখায় লেখক প্রজন্মকে গৌরব এবং ঐতিহ্যের আলোয় শাণিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। হীনমন্যতা, দীনতা থেকে বেরিয়ে এই সমাজকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উদার আহ্বান জানিয়েছেন সমাজপতিদের প্রতি।