সাধারণ ধারণায় গল্প ও কেচ্ছা-কাহিনী নিছক অবসর কাটানো ও হালকা বিনোদন-সামগ্রী হিসেবে বিবেচিত। সাধারণ গল্প-কাহিনীগুলো যারা গড়েন ও পড়েন এই দৃষ্টিকোণ থেকেই গড়ে-পড়ে থাকেন। ইতিহাস ও সত্যাশ্রয়ী গল্প-কাহিনীগুলো কিন্তু তেমন নয়। এর কিছু তো সূত্রসমৃদ্ধ নিখাঁদ সত্য আর কিছু সূত্রহীন হলেও পরম বাস্তব। কঠিন বিষয়কে সহজ ও স্মরণীয় করতে এবং সুকঠিন সত্যকে গ্রহণযোগ্য ও বরণীয় করতে এসব গল্পের জুড়ি নেই। অনেক সময় ঘণ্টা-দু’ঘণ্টার জ্ঞানগর্ভ আলোচনাও পাঁচ মিনিটের গল্পে হৃদয়ঙ্গম করানো যায়। গল্প তখন গল্প থাকে না; হয়ে ওঠে মস্তবড় হাতিয়ার।
গল্প-কাহিনীর প্রতি মানুষের স্বভাবজাত ঝোঁক এবং এর বাস্তব উপকার বিবেচনায় নিকট ও দূর অতীতের প্রায় সকল দীনী মুরুব্বী তাদের লেখনী ও বয়ানে গল্পের ব্যবহার করেছেন। কোন কোন মুরুব্বীর তো পছন্দনীয় গল্পের পৃথক সংকলনই বিদ্যমান। মুরুব্বীগণের নগণ্য অনুকারী হওয়ায় আমিও এর বাইরে নই। প্রায় চল্লিশ বছরের শিক্ষকতা ও দীনী খিদমতের সুবাদে ওয়াজ-নসীহত ও দরস-তাদরীসে আলোচ্য বিষয়কে স্পষ্ট ও সকলের নিকট বোধগম্য করার জন্যে প্রচুর গল্প-কাহিনী বলা হয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই বড়দের থেকে শ্রুত কিংবা তাদের কিতাব থেকে আহরিত।
বড়দের মত আমিও কামনা করি, আমার সকল দীনী খিদমত সংরক্ষিত হোক। উদ্দেশ্য, তাঁদের থেকে আহরিত ইলম ও হিকমত এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞা কালের গর্ভে হারিয়ে না যাক; লিখিতভাবে সংরক্ষিত হোক। সে কারণে আমার দীর্ঘ দিনের তামান্না ছিলো, আমার বলা শিক্ষণীয় গল্পগুলোও কেউ সংরক্ষণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করুক।